কোন বিখ্যাত ঘটনা বা বিখ্যাত কোন দিন উপলক্ষে গুগল নিয়ে আসে নতুন নতুন ডুডল। এই গুগল ডুডল (Google Doodle)-এর মধ্যে দিয়ে সেই বিশেষ দিন গুলো কে স্মরণীয় করে রাখা হয়। করা হয় শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। আজকের গুগল ডুডলটি যদি আপনি খেয়াল করেন, তাহলে সেখানে একটি পাত্রে ধূমায়মান গ্রিন টি (Green Tea) দেখতে পাবেন।
তার পাশে নোটবুক এবং পেন্সিল রাখা। তার পাশে একটি ব্যাগ থেকে কিছু গ্রিনটি বেরিয়ে রয়েছে। তারই পাশে নানান গবেষণার সামগ্রী রয়েছে এবং একজন সেই সামগ্রী নিয়ে গবেষণায় মগ্ন হয়ে রয়েছেন, এমনটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি।
আজকের গুগল ডুডলের গুরুত্ব কি?
এবার আপনার মনে প্রশ্ন জাগবে কেন এই বিশেষ গুগল ডুডল নিয়ে এসেছে গুগল! সেইটা জানাবো আজকের আর্টিকেলে। আজকের গুগল ডুডলে আমরা যাকে দেখতে পাচ্ছি তার নাম মিচিও সুজিমুরা (Michiyo Tsujimura)। আজ তার 133 তম জন্মদিন। মিচিও সুজিমুরা একজন জাপানিজ এডুকেটর এবং বায়োকেমিস্ট। তিনি গ্রিন টি নিয়ে যুগান্তকারী কিছু গবেষণা চালিয়ে গিয়েছিলেন। তারই সাথে সামনে এনেছিলেন সেই গ্রিন টির উপকারিতা গুলোকেও।
মিচিও সুজিমুরা আজকের দিনে 1888 সালে জাপানের Okegawa, Saitama Perfecture-এ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। প্রথম দিকে তিনি বিজ্ঞান পড়াতেন। 1920 সালে একজন সাইন্টিফিক রিসার্চার হওয়ার স্বপ্ন সফল করার উদ্দেশ্যে তিনি হোক্কাইডো ইম্পেরিয়াল ইউনিভার্সিটি জয়েন করেন। যেখানে জাপানিজ সিল্ক ওয়ার্ম এর নিউট্রিশনাল প্রপার্টিজ নিয়ে তিনি এনালাইজ করা শুরু করেন।
পরবর্তীকালে টোকিও ইম্পেরিয়াল ইউনিভার্সিটি তে তিনি ট্রানস্ফার হয়ে যান। সেখানে গ্রীন ট্রি বায়োকেমিস্ট্রি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকেন। সেই গবেষণায় তার সাথে ছিলেন ডঃ উমেতারও সুজুকি। এই যৌথ রিসার্চের ফলেই সামনে আসে গ্রিন টির মধ্যে থাকা অভূতপূর্ব ভিটামিন C-এর উপস্থিতি। 1929 সালে তিনি চায়ের এক তিক্ত উপাদান ক্যাটেচিন (Catechin) কে আলাদা করেন। পরবর্তীকালে তিনি ট্যানিন (Tannin) কেউ আলাদা করেন যেটা আরও এক তিক্ত কম্পাউন্ড চায়ের।
পরবর্তীকালে এই বিষয়ে তিনি তাঁর ডক্টরাল থিসিস কমপ্লিট করেন। যেটা ছিল “অন দা কেমিক্যাল কম্পনেন্টস অফ গ্রীন টি” এই বিষয়ে। 1932 সালে তিনি জাপানের প্রথম মহিলা ডক্টর হন এগ্রিকালচারে। নিঃসন্দেহে এক অভাবনীয় সাফল্য ছিল সেটি।
তিনি 1950 সালে টোকিও ওমেন্স হায়ার নর্মাল স্কুলের ফ্যাকাল্টি অব হোম ইকোনমিক্স এর প্রথম ডিন হন। আর আজকে আমরা এই বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্বের 133 তম জন্মবার্ষিকী পালন করছি। শুভ জন্মদিন মিচিও সুজিমুরা। তার অবদান বিশ্ববাসী কখনও ভুলবে না।