যুগ যুগ ধরেই মহাকাশের প্রতি আমাদের আকর্ষণ অমোঘ। এই আকর্ষণের কারণেই বারবার নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মেতে উঠেছে বিশ্বের অনেক দেশই। তবে এবার এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার পদক্ষেপেই আরো একধাপ এগিয়ে গেল চীন। সম্প্রতি চীনের বিজ্ঞানীরা আর্টিফিশিয়াল অর্থাৎ কৃত্রিম চাঁদ (Artificial Moon) তৈরি করে ফেলেছেন তাদের দেশে। আর এর গুরুত্ব অনেক। জেনে নেওয়া যাক সমস্ত কিছু।
নিজেদের দেশেই এক কৃত্রিম চাঁদ (Artificial Moon) তৈরি করে ফেলেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা
মহাকাশের প্রতি আমাদের আগ্রহের শেষ নেই অনন্তকাল থেকেই। তবে মহাকাশে যাবার আগে সমস্ত যন্ত্রপাতি সহ ভালোভাবে প্রশিক্ষণ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। সেইজন্যই বিশ্বের মহাকাশচর্চা কেন্দ্র গুলো নানান যন্ত্রপাতির সাহায্য নিয়ে থাকে। এমনই কাজ করার জন্য চীনের বিজ্ঞানীরা তৈরি করে ফেলেছেন আর্টিফিশিয়াল মুন, অর্থাৎ কৃত্রিম চাঁদ।
আমাদের একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের প্রতি বরাবরই আকর্ষণ রয়েছে আমাদের। সেখানেই ভবিষ্যতে তাদের মহাকাশচারীদের পাঠানো এবং সেখানে নানান বৈজ্ঞানিক গবেষণা করার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতেই চীন তৈরি করেছে এই আর্টিফিশিয়াল মুন। সাধারণত পৃথিবীর তুলনায় চাঁদের আকর্ষণ ক্ষমতা ছয় ভাগের এক ভাগ। অর্থাৎ অনেকটাই কম।
সেই ধরনের পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার জন্য এখনো পর্যন্ত নাসার বিজ্ঞানীদের একটু অন্যভাবে ট্রেনিং দেওয়া হয়। তাদেরকে প্যারাবোলিক ফ্লাইট ব্যবহার করে এই ভারহীন অবস্থার সাথে পরিচিত করে তোলা হয়। আর এই ধরনের পরীক্ষা ক্ষণস্থায়ী। অর্থাৎ খুব বেশিক্ষণ ধরে এই পরিস্থিতি পৃথিবীতে থেকে অনুভব করা প্রায় অসম্ভবই।
সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করার চেষ্টায় মেতে উঠেছে চীনের বিজ্ঞানীরা। জানা যাচ্ছে তাদের এই কৃত্রিম চাঁদ প্রকৃতপক্ষে চাঁদের মতোই কম আকর্ষণ যুক্ত পরিবেশ অনেকক্ষণ ধরে রাখতে পারবে। যার জন্য বিজ্ঞানীরা সম্পূর্ণভাবে চাঁদের মত পরিবেশে কিভাবে মানিয়ে নেবেন সেই বিষয়ে আগাম প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে পারবেন। তাদেরকে আর এই ধরনের প্যারাবোলিক ফ্লাইটের উপর ডিপেন্ড করে থাকতে হবে না। যতক্ষণ ইচ্ছা ততক্ষণ ধরেই তারা চালিয়ে যেতে পারবেন প্রস্তুতি পর্ব।
শুধু এখানেই থেমে থাকছে না তাদের পরিকল্পনা। এই কৃত্রিম চাঁদের মধ্যে প্রকৃত চাঁদের মতই পাথর ধুলোবালিতে পরিপূর্ণ করতে চাইছে তারা। যাতে করে সম্পূর্ণ চাঁদের পরিবেশের অভিজ্ঞতাই লাভ করতে পারেন তাঁদের মহাকাশচারীরা। জানা যাচ্ছে এখনো পর্যন্ত একটাই সমস্যা তাদের সামনে এসে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে- এই কৃত্রিম চাঁদের ডায়ামিটার মাত্র 2 ফিট। যার মধ্যে ঘোরাফেরা করার মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। তবে এর বড় আকৃতি তৈরির চেষ্টায় মগ্ন হয়ে রয়েছেন চীনের বিজ্ঞানীরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই চাঁদে মানুষ পাঠানোর জন্য জোর কদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে নাসা। সেই সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রেও চীনের এই প্রযুক্তি ভালো রকমের সাহায্য করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এইরকমই গুরুত্বপূর্ণ টেক আপডেট মিস না করতে চাইলে আমাদের সঙ্গে থাকুন, শ্রেষ্ঠ থাকুন। প্রতিদিনের বাছাই করা গুরুত্বপূর্ণ টেক আপডেট WhatsApp-এ পেতে এখানে ক্লিক করুন!